ভারতীয় বাজারে ক্রিপ্টো ট্রেডিং শুরু করার সহজ উপায়
ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং, সংক্ষেপে
ক্রিপ্টো ট্রেডিং, সাম্প্রতিক
বছরগুলোতে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ ডিজিটাল সম্পদ (যেমন
বিটকয়েন, ইথেরিয়াম)
আর্থিক জগতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। এই গাইডটি ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের মূল বিষয়, বিভিন্ন
কৌশল, ঝুঁকি
ব্যবস্থাপনা, এবং
নতুন প্রবণতাগুলি সহজভাবে ব্যাখ্যা করবে। আপনি যদি নতুন হন বা অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হন, এই
গাইডটি আপনাকে সাহায্য করবে ক্রিপ্টো জগৎ বুঝতে।
ক্রিপ্টো ট্রেডিং কী?
ক্রিপ্টো ট্রেডিং হলো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা বা বিনিময় করা। এটি অনেকটা শেয়ারবাজারের মতো, কিন্তু
এখানে ব্যবহৃত হয় ব্লকচেইন প্রযুক্তি। এই ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে আপনি মুনাফা করতে পারবেন, তবে
বাজারের ওঠানামা বা অস্থিরতাও রয়েছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির ইতিহাস
২০০৯ সালে বিটকয়েন চালু হওয়ার মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সির যাত্রা শুরু হয়। এটি ছিল প্রথম বিকেন্দ্রীকৃত (decentralized) ডিজিটাল মুদ্রা। পরে আরও অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি (যেমন
ইথেরিয়াম, ডজকয়েন)
বাজারে এসেছে। আজ এটি পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ও টোকেনের মধ্যে পার্থক্য
- ক্রিপ্টোকারেন্সি: বিটকয়েন বা ইথেরিয়ামের মতো মুদ্রা, যা নিজস্ব ব্লকচেইনে কাজ করে।
- টোকেন: এটি বিদ্যমান ব্লকচেইনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয় এবং নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন ভোটিং বা পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেস পাওয়া।
ট্রেডিংয়ের জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি
- বিটকয়েন (Bitcoin): ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের "প্রধান মুদ্রা"।
- ইথেরিয়াম (Ethereum): স্মার্ট কন্ট্র্যাক্টের জন্য বিখ্যাত।
- ডজকয়েন (Dogecoin): মজার একটি ক্রিপ্টো, যা এখন অনেক জনপ্রিয়।
ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন কৌশল
ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ে সফল হতে হলে কিছু কৌশল জানা দরকার:
1. ডে ট্রেডিং:
- একই দিনে ক্রিপ্টো কেনা ও বিক্রি করা।
- অল্প সময়ে মুনাফা করার চেষ্টা।
2. সুইং ট্রেডিং:
- কয়েক দিন বা সপ্তাহ ধরে সম্পদ ধরে রাখা।
- বড় দামের পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা।
3. হডলিং:
- দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ।
- ভবিষ্যতের লাভের জন্য ক্রিপ্টো ধরে রাখা।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
ক্রিপ্টো বাজার খুবই অস্থির। তাই, ঝুঁকি
কমাতে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন:
1. স্টপ-লস অর্ডার সেট করুন:
আপনার ক্রিপ্টো সম্পদ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিক্রি হবে, যাতে
বড় ক্ষতি এড়ানো যায়।
2. পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যময় করুন:
সব টাকা এক মুদ্রায় না রেখে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করুন।
ভারতে ক্রিপ্টো ট্রেডিং সম্ভব?
ভারতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং অনুমোদিত। তবে কিছু নিয়ম রয়েছে:
- ৩০% কর: ক্রিপ্টো থেকে আয়ের ওপর ৩০% কর দিতে হয়।
- ১% টিডিএস: প্রতিটি লেনদেনের জন্য ১% টিডিএস দিতে হবে।
- ব্যবহার সীমাবদ্ধ: ক্রিপ্টো আইনত মুদ্রা নয়, অর্থাৎ আপনি এটি দিয়ে পণ্য বা পরিষেবা কিনতে পারবেন না।
ভারতে জনপ্রিয় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ:
- WazirX
- CoinDCX
- ZebPay
উদীয়মান প্রবণতা
- ডি-ফাই (DeFi): বিনিয়োগ ও ঋণ নেওয়ার জন্য বিকেন্দ্রীকৃত প্ল্যাটফর্ম।
- এনএফটি (NFT): ডিজিটাল শিল্প ও সংগ্রহযোগ্য সম্পদের নতুন দুনিয়া।
ক্রিপ্টো ট্রেডিং একটি উত্তেজনাপূর্ণ কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ জগৎ। সঠিক জ্ঞান ও পরিকল্পনা থাকলে আপনি এখানে লাভ করতে পারবেন। তবে, সবসময়
নিরাপত্তা ও নিয়ম মেনে চলুন।
0 মন্তব্যসমূহ