আয়কর রিটার্ন ফাইল করছেন? এই ভুলগুলো করবেন না!
ট্যাক্স
ফাইল করার কথা শুনলেই
মাথায় একটা টেনশন আসে,
তাই না? ITR ফাইল
করা অনেকের জন্যই জটিল মনে হতে পারে। কিন্তু যদি
ভুল হয়, তাহলে জরিমানা, রিফান্ড দেরি, এমনকি ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট থেকে নোটিশও পেতে পারেন!
তাই
সময় থাকতে সাবধান হন! ভারতে আয়কর রিটার্ন ফাইল করার সময় সবচেয়ে বেশি যে ১০টি ভুল হয়, সেগুলো এড়ানোর উপায় জেনে নিন।
১. ভুল ITR ফর্ম নির্বাচন করা
সঠিক
ITR ফর্ম না বাছলে আপনার রিটার্ন বাতিল হতে পারে বা প্রসেসিংয়ে দেরি হতে পারে।
👉 আপনার
জন্য কোন ফর্ম ঠিক?
- ITR-1: বেতনভোগীদের জন্য (₹৫০ লাখ পর্যন্ত আয়, কোনো ব্যবসায়িক আয় নেই)
- ITR-2: যদি ক্যাপিটাল গেইন, বিদেশি সম্পদ থাকে
- ITR-3: ব্যবসায়ী ও পেশাদারদের জন্য
- ITR-4: প্রেজাম্পটিভ ট্যাক্স স্কিমের অধীনে (ধার্যকৃত কর ব্যবস্থা)
✅ ইনকাম ট্যাক্স পোর্টালে লগইন করে সঠিক ফর্ম বেছে নিন।
২. সমস্ত আয়ের উৎস ঘোষণা না করা
অনেকে
শুধু বেতনের
আয়
দেখান, কিন্তু অন্যান্য উৎসের কথা ভুলে যান।
যেমন:
- সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদ
- ফিক্সড ডিপোজিট (FD) বা রেকারিং ডিপোজিট (RD)-এর সুদ
- ফ্রিল্যান্স বা পার্ট-টাইম ইনকাম
- শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড বা সম্পত্তি বিক্রির লাভ (ক্যাপিটাল গেইন)
- বাসা ভাড়া থেকে আয়
✅ আপনার সমস্ত আয়ের হিসাব দিন, নাহলে নোটিশ পেতে পারেন!
৩. PAN ও Aadhaar লিঙ্ক না করা
সরকারের
নিয়ম অনুযায়ী, PAN এবং Aadhaar লিঙ্ক করা বাধ্যতামূলক। যদি লিঙ্ক
না থাকে, তাহলে আপনার
PAN নিষ্ক্রিয়
হয়ে যেতে পারে এবং আপনি ট্যাক্স
রিটার্ন ফাইল করতে পারবেন
না।
✅ ইনকাম ট্যাক্স পোর্টালে PAN-Aadhaar লিঙ্ক স্ট্যাটাস চেক করুন।
৪. Form 26AS & AIS না দেখা
Form 26AS
ও
Annual Information Statement (AIS) হল
আপনার
সমস্ত
TDS, আয়,
এবং বড় লেনদেনের রেকর্ড। যদি আপনি
এতে থাকা কোনো তথ্য
ভুলে যান, তাহলে ইনকাম ট্যাক্স নোটিশ পেতে পারেন।
✅ রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে অবশ্যই Form 26AS ও AIS চেক করুন।
৫. ভুল কর বসানো বা ছাড় দাবি করা
অনেক
সময় মানুষ ভুলভাবে ছাড়
(ডিডাকশন)
দাবি করেন অথবা বৈধ ছাড়
নেওয়া ভুলে যান। যেমন:
- 80C ধারা: PPF, LIC প্রিমিয়াম, ELSS বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত
- 80D ধারা: স্বাস্থ্য বীমার
প্রিমিয়ামের উপর ছাড়
- HRA (House Rent Allowance):
কিন্তু ভাড়া রসিদ না থাকলে সমস্যা হতে পারে
✅ সঠিক ছাড়ের জন্য কাগজপত্র রাখুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনি যা দাবি করছেন তা বৈধ।
৬. ITR ফাইল করার পর যাচাই (Verify) না করা
অনেকে মনে করেন, ফাইল করলেই কাজ শেষ! কিন্তু ৩০
দিনের
মধ্যে
রিটার্ন
যাচাই
(E-Verify) না
করলে,
সেটি বাতিল হয়ে যায়।
✅ যেভাবে
ITR ভেরিফাই
করবেন:
- Aadhaar OTP, Net Banking বা Demat অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে E-Verify করুন
- অথবা CPC বেঙ্গালুরুতে ITR-V ফর্ম ডাকযোগে পাঠান
৭. ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ভুল তথ্য দেওয়া
যদি
আপনি রিফান্ড
পাওয়ার
জন্য ভুল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা IFSC কোড দেন, তাহলে টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে
আসবে না!
✅ ফর্ম জমা দেওয়ার আগে ব্যাংকের তথ্য ভালো করে চেক করুন।
৮. অগ্রিম কর (Advance Tax) বা স্ব-মূল্যায়ন কর (Self-Assessment Tax) না পরিশোধ করা
যদি
এক
বছরে ₹১০,০০০-এর বেশি করযোগ্য আয় থাকে, তাহলে অগ্রিম
কর
(Advance Tax) পরিশোধ
করতে হবে।
✅ বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সার, ব্যবসায়ী, এবং FD-এর সুদ বা ক্যাপিটাল গেইন থেকে আয় হলে আপনাকে এই কর দিতে
হবে।
৯. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন না ফাইল করা (Deadline: 31 জুলাই)
যদি
নির্ধারিত সময় (৩১ জুলাই) পেরিয়ে
যায়, তাহলে আপনাকে:
- ₹৫,০০০ পর্যন্ত দেরি ফি (Section 234F) দিতে হবে
- জরিমানা ও সুদ (234A, 234B, 234C) দিতে হবে
- ক্যাপিটাল লস (Stock, Property) পরের বছর ক্যারি ফরোয়ার্ড করতে পারবেন না
✅ সময়মতো ফাইল করুন এবং শেষ মুহূর্তের চাপ এড়ান!
১০. আয়কর রিটার্নের রেকর্ড সংরক্ষণ না করা
অনেকেই
পুরোনো
রিটার্নের
রেকর্ড
রাখেন
না। কিন্তু, আয়কর
দপ্তর ৬
বছর পর্যন্ত আপনার রিটার্ন চেক করতে পারে।
✅ আপনার এই নথিগুলো সংরক্ষণ করুন:
- ITR-V অ্যাকনোলেজমেন্ট
- ট্যাক্স পেমেন্ট রসিদ
- ডিডাকশনের কাগজপত্র
শেষ কথা: স্মার্টভাবে ট্যাক্স ফাইল করুন, ঝামেলা এড়ান!
আয়কর
রিটার্ন ফাইল করা খুব কঠিন নয়, যদি আপনি এই
ভুলগুলো এড়ান! তাই সঠিক ফর্ম নির্বাচন করুন, সমস্ত আয় ঘোষণা করুন, এবং ভুল না করে সময়মতো রিটার্ন জমা দিন।
👉 আপনার
কোনো ট্যাক্স সংক্রান্ত প্রশ্ন আছে? নিচে কমেন্ট করুন!
বিস্তারিত
তথ্যের জন্য ভারতীয়
আয়কর দপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখুন।
0 মন্তব্যসমূহ